হাওজা নিউজ এজেন্সি: আমিরুল মুমিনীন (আ.) ‘নাহজুল বালাগা’র অষ্টম হিকমাতে বলেন,
أَعْمَالُ الْعِبَادِ فِی عَاجِلِهِمْ نُصْبُ أَعْیُنِهِمْ فِی آجَالِهِمْ
“এই পার্থিব জীবনে করা মানবের কাজসমূহ, তাদের পরকালীন জীবনে চোখের সামনে উপস্থাপিত হবে।”
ব্যাখ্যা: সৎ ও ন্যায়ের পথে অবিচল থাকার জন্য এবং সত্য থেকে বিচ্যুত না হওয়ার জন্য—এ এক গভীর শিক্ষা। যদি আমরা স্মরণ রাখি যে, একদিন আমাদের প্রতিটি কাজ আল্লাহর ইনসাফপূর্ণ আদালতে আমাদের সামনে স্পষ্ট হয়ে যাবে, তবে এ চিন্তাই আমাদের আখিরাতের প্রতি সচেতন রাখবে।
এই বিষয়টিকে আরও সংবেদনশীল করে তোলে কুরআনের একটি আয়াত, যেখানে বলা হয়েছে যে, কিয়ামতের দিন মানুষ নিজেই নিজের বিচারক হবে:
اقْرَأْ كِتَابَكَ كَفَىٰ بِنَفْسِكَ الْيَوْمَ عَلَيْكَ حَسِيبًا
"তোমার আমলনামা পাঠ করো, আজকের দিনে তোমার নিজের বিচারক হবার জন্য তুমি নিজেই যথেষ্ট।”
[সূরা ইসরা, আয়াত ১৪]
কুরআনের এ আয়াত এবং ইমাম আলীর (আ.) উক্তির ভিত্তিতে বলা যায়—আখিরাতের মহা-আদালতই একমাত্র আদালত যেখানে অভিযুক্ত নিজেই বিচারক হবে। কারণ সেদিন কোনো পালানোর পথ থাকবে না এবং আমাদের প্রতিটি কাজ চোখের সামনে দৃশ্যমান হবে। তখন আর কেউ নিজেকে আড়াল করতে পারবে না, এবং সেই লজ্জা হবে চরমরূপে অসহনীয়।
তাহলে কী করা উচিত?
আয়াত-রেওয়ায়েতসমূহ আমাদেরকে শিক্ষা দেয়—এই দুনিয়াতেই নিজের হিসাব নেওয়া শুরু করে দাও, যাতে কিয়ামতের দিনে লজ্জিত হতে না হয়। যদিও এই লজ্জা দুনিয়াতেও অনুভূত হয়, তবে দুনিয়ার দিক থেকে গাফিলতা আমাদেরকে সত্য থেকে আড়াল করে রাখে। কিন্তু আখিরাতে এই গাফিলতা আর থাকবে না—সেখানে সবকিছু অত্যন্ত স্পষ্টভাবে আমাদের সামনে উন্মোচিত হবে।
এই বিষয়ে ইমাম আলীর (আ.) উপদেশ হলো-
حَاسِبُوا أَنْفُسَكُمْ قَبْلَ أَنْ تُحَاسَبُوا، وَ وَازِنُوهَا قَبْلَ أَنْ تُوَازَنُوا
“নিজের বিচার করো, তার আগে যে তোমার বিচার করা হবে; নিজেকে পরিমাপ করো, তার আগেই যে তোমাকে পরিমাপ করা হবে।”
[গুরারুল হিকাম, খণ্ড- ১, পৃষ্ঠা- ৩৫২]
সূত্র: হাওজা নিউজ এজেন্সির শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক বিভাগ কর্তৃক প্রস্তুতকৃত।
আপনার কমেন্ট